১০৫ দশমিক ৬ ক্যারেটের কোহিনূর হীরার জন্মস্থান ভারত। চতুর্দশ শতাব্দীতে ভারতেই মিলেছিল এ হীরা। তার পর বহুবার হাতবদল হয়। ১৮৪৯ সালে পাঞ্জাব অধিকার করে ব্রিটিশরা।

বিশ্বের সম্ভবত সবচেয়ে সুপরিচিত হীরক – কোহিনূর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে এই কোহিনুর হস্তান্তর করা হয়েছিলো ১৮৪৯ সালে। সেই থেকে ব্রিটেনের শাসকদের মাথায় শোভা পেতে থাকে এ হীরা। তারও আগে ভারত এবং মধ্য এশিয়ার অন্য বেশ কয়েকজন শাসকের মাথায় এই কোহিনূর মুকুট শোভা পেয়েছে।

এখন প্লাটিনামের মুকুটে বসানো রয়েছে কোহিনূর। ১৯৩৭ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জের অভিষেকের সময় তৈরি করা হয়েছিল সেই মুকুট। পরেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা প্রথম এলিজাবেথ। টাওয়ার অব লন্ডনে রাখা থাকে সেই মুকুট। চার্লসের অভিষেকের দিন তা মাথায় উঠবে ক্যামিলার। ব্রিটিশ রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, শাসকের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরাধিকারীকে রাজগদির দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।

সেই প্রথা অনুযায়ীই আজ ব্রিটেনের পরবর্তী শাসক হিসাবে প্রিন্স চার্লস শপথ গ্রহণ করবেন। সেই সময়ই ক্যামিলিয়ার মাথায় উঠবে কুইনের মুকুট। ১৯৩৭ সালে কিং জর্জ ষষ্ঠের করোনেশন বা শাসক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় প্ল্যাটিনামের মুকুট তৈরি করা হয়। ওই মুকুটের মধ্যমণিই কোহিনূর। প্রথম এই মুকুট পরেন রানি এলিজাবেথ। বর্তমানে লন্ডন টাওয়ারেই সাজিয়ে রাখা রয়েছে এই মুকুট।

কোহিনূর হিরার গোড়ার কথা

ব্রিটিশ রাজপরিবারের ধনরত্ন বিষয়ে গবেষণা করেছেনি ইতিহাসবিদ আনা কী বলেন, কোহিনূর পাঞ্জাবের রাজ পরিবারের দখলে ছিল মাত্র কুড়ি বছর – প্রায় একইরকম পরিস্থিতিতে তারা আফগানদের কাছ থেকে এটির অধিকারী হয়েছিলো। আফগানরা আবার এটা পেয়েছিলো পারস্যের শাসকদের কাছ থেকে। আর পারস্যের রাজপরিবার তা নিয়েছিলো মোঘল শাসকদের কাছ থেকে।

ইতিহাসবিদ আনা কী বলেন, শেষ যখন তা ভারতে ছিলো সেটা প্রায় তিনশো বছর আগের কথা। এই কোহিনূরের উৎস সন্ধান তাই ক্রমশই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় – তবে, একটা কথা ঠিক যে এই কোহিনূর হীরকের উৎস ভারতেরই কোন খনি। অষ্টাদশ শতকের আগে আফ্রিকায় হীরকের কোন খনি আবিষ্কৃত হয় নি। সুতরাং এই হীরক ভারতীয় খনি থেকেই পাওয়া।

গতকালই রানির অসুস্থতার খবর সামনে আসতেই স্কটল্যান্ডে ছোটেন রাজ পরিবারের সদস্যরা। ছেলে প্রিন্স চার্লস থেকে নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি- সকলেই দ্রুত বালমোরাল প্রাসাদে উপস্থিত হন। ৯৬ বছর বয়সে আজ (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সরকারিভাবে মৃত্যুর খবরটি জানিয়েছে বাকিংহাম প্যালেস। সেখান থেকেই রানির এলিজাবেথের মৃত্যুর পর জানানো হয় যে, এবার ইংল্যান্ডের রাজগদিতে বসতে চলেছেন প্রিন্স চার্লস। তিনিই যাবতীয় রাজপাট সামলাবেন।